সতর্কীকরণঃ লেখার প্রয়োজনে কিছু অশ্লীল বাক্য প্রয়োগ করা হয়েছে।ব্লগের সকল ব্লগার
লেখক ও পাঠক দের কে প্রাপ্ত বয়স্ক মনে করে লেখা হয়েছে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক কারো
এটি পড়ার দরকার নেই। সকল নারীদের কে নিয়ে
এই লেখাটি লিখিত হয়নি।
বাংলাদেশে সম্প্রতি নারী অধিকার,নারী স্বাধীনতা, নারী নির্যাতন এসব নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি বেশ চলছে। সভা,সেমিনার, টিভি টক শো এই সব তো আছেই।কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ অধ্যাপিকা রুমানা মঞ্জুর স্বামী করতিক নির্যাতিত হবার পর অনেকে জেগে উঠেছিলেন। ঘুমন্ত বিবেগ কে অনেকে জাগ্রত করছিলেন। প্রতিবাদ, সাংবাদিক সম্মেলন, স্মারক কর্মসূচী অনেক কিছু ই হয়ে গেছে। এবার বিচার এর পালা। দেখা যাক সাইদের কি হয়? অন্যদিকে সম্প্রতি রংপুরের তথাকথিত সমাজ পতিদের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১ নারী। একুশে টিভির প্রতিবেদনে বিষয় টি দেখানোর পর প্রশাসন নড়ে চড়ে বসেছেন। আর সেই সাথে নারী নেত্রী বৃন্দ আবারো সরব হয়ে উঠেছেন নারী অধিকার নিয়ে। আজকের লেখাটি আমি লিখতে চাচ্ছি একটু অন্য বিষয় নিয়ে।না,নারী অধিকার,নারী স্বাধীনতা, নারী নির্যাতন এইসব নিয়ে লিখবনা। লিখতে চাচ্ছি নারী কেন পণ্য হচ্ছে এবং এর পেছনে দায়ী বা কে? এই বিষয়টি নিয়ে।
ইদানিং কালে কিছু নারীবাদী সমাজকর্মীরা নারী অধিকার নিয়ে অনেক বড় বড় লেকচার দিচ্ছেন। নারীকে সম অধিকার দিতে হবে। নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। আমরা তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করি। জগতের সকল শুভ আর অশুভ সব কিছুই নারী আর পুরুষ এর মিশেলেই হোক। তবে ঐ সব নারি বাদীরা কিন্তু নারীরা যে দিন দিন ভোগ্য পন্যে পরিনত হচ্ছে তা নিয়ে একটি কথাও বলছেন না। তারা যখন বলছে নারীরা ও মানুষ!তখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে নারীরা অমানুষ ছিল কবে? গোলামীর জিঞ্জির পরে নারীরা আর কত দিন ঘরে বসে থাকবে? তখন আমদের ও একটি প্রশ্ন ঐ নারীবাদীদের নিকট। নারী ভোগ্য পন্যে রুপান্তরিত হোক আপনারা কি এটি ই চান? মানুষ হতে হলে কি নারীকে ভোগ্য পন্য হতে হবে? অনেকে এ ও বলেন পুরুষ শাসিত এই সমাজ ব্যাবস্থায় নারীদের কোন মর্যাদা নেই। তাদের মূল্যায়ন করা হয়না। সেই সাথে ইদানিং কালে দেখা যাচ্ছে কোরআন, হাদিস এর বেশ অপ ব্যাখ্যা। কেউ কেউ আবার কোরআনের আয়াত নিজের মত করে দিচ্ছেন (নাউযুবিল্লাহ)। যেইগুলি বেশ বিব্রত কর ও বটে।
নারী কে পণ্য বানায় কারা? আমরা পুরুষ নাকি নারী স্বাধীনতা? নাকি নারী নিজের ইচ্ছাতেই পণ্য হচ্ছে? নারীকে পণ্য বানাতে যতটা পুরুষ দায়ী তার চাইতে বহুলাংশে নারীরাই কি দায়ী? নারী কি কেবল ভোগের সামগ্রী? নারী কি কেবল যৌন সঙ্গম আর যৌন শুঁড় শুঁড়ি ই দিতে ই আমাদের এই সমাজ ব্যাবস্থার সাথে আপোষ করছে? নারী কি কেবল আমোদ ফুর্তি করবার জন্য আমাদের পুরুষ শাসিত এই সমাজে আমদের বাহু বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে? সাম্প্রতিক বেশ কিছু কর্মকাণ্ড দেখে আমার মাথায় বিষয় গুলী ঘুরপাক খাচ্ছে। সৃষ্টি কর্তা নারীকে পুরুষ এর তুলনায় বড় বেশী সুন্দর করে গড়ে তুলেছেন। নারী রা পদে পদে বিপদের সম্মুখিন হতে পারে,নারীরা পুরুষ এর তুলনায় স্পর্শকাতর এই জন্যই বোধ হয় বিধাতা নারীদের পর্দা ফরজ করেছেন( মুছলমান নারীদের জন্য)। যাই হোক আমি পর্দা নিয়ে কিছু লিখবনা। আমার ভাবনার বিষয় হচ্ছে নারীরা কেন পণ্য হচ্ছে? আমাদের সমাজ ব্যাবস্থায় বেশ্যা পাড়া যায়েজ! কিন্তু নর পাড়া কি যায়েজ? পুরুষ রা জৈবিক চাহিদা মিটাতে ঐ বেশ্যা পাড়ায় যায়। নারী দেহ ভোগ করে লাভ করে অকৃত্রিম সুখ! ঐ নারীটির সুখ ঐখানে মুখ্য নয়। মুখ্য হচ্ছে ঐ নারীটি কি ঐ পুরুষটিকে সেই যৌন সুখ দিতে পেরেছে? যেই সুখটুকু নিতে ঐ ভ্রমর টি মধু পান করতে এসেছে ঐ নারী নামের ফুলটিতে? এইখানে নারী কি পণ্য নয়? আমরা পুরুষ রাই তো যাচ্ছি ঐ নারীর কাছে। সেই নিষিদ্ধ সুখ নিয়ে ফিরে আসার আগেই ঐ পণ্য (নারী) টির হাতের মুঠোয় ধরিয়ে দিচ্ছি গোটা কয়েক টাকা। তবে নারী কি এই খানে পণ্য? সেবা নিয়ে তার বিনিময় দিচ্ছি। এটা কি তবে সেবা মূলক পণ্য? কে বানাচ্ছে এই পণ্য টিকে? কে বা কারা দায়ী? এইখানে নারী কি পেটের তাগিদে এই পতিতা বৃত্তি পেশা টি বেছে নিচ্ছে?
নারীর এইখানে স্বাধীনতা আছে যে,সে চাইলেই এই অন্ধকার পথে পা বাড়াতে পারেন। নারী যদি পরাধীন হতেন তবে কি এই নারী এই শরীর বিক্রির মত নিষিদ্ধ পথে পা বাড়াতেন? সম্প্রতি আমদের দেশের টি ভি চ্যানেল এর জয় জয়াকার অবস্থা। এই বছর এর শেষ দিকে প্রায় ২৫ টির বেশী চ্যানেল দেখা যাবে। তো সেই চ্যানেল গুলী পাশ্চাত্তের সংস্কৃতির আইডিয়া বেশ ভাল ভাবেই গ্রহন করছে। মুক্ত বাযার অর্থনীতিতে পন্যের অবাধ বিচরন। এক দেশের পণ্য অন্য দেশে ঢুকছে। সেই সাথে টি ভি চ্যানেল গুলিতে চলছে বিজ্জাপন। প্রচার ও প্রসার এর জন্য এই বিজ্জাপনে ও নারীদের জয় জয়াকার অবস্থা। নারী ছাড়া বিজ্ঞাপন যেন হয়না। অনেকে বলবেন নারী যদি বিজ্ঞাপনে থাকেন তবে সমস্যা কি? না সমস্যা নেই। তবে যখন একটি ব্লেড এর বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে যে ব্লেড কি মসৃণ ও ধারালো সেইটি দেখানোর জন্য নারীর বগল এর পশম গুলী কাটছে আর নারী এক্সপ্রেশন দিচ্ছে আহ! কি মসৃণ! এটি কি পুরুষ দের দিয়ে করানো যেতনা? ইন্ডিয়ার এক্স এর বডি স্প্রে আমদের দেশে ইউনিলিভার বাযারজাত করছে। আমাদের দেশে এই এক্স এর বিজ্ঞাপন নেই। তবে ইন্ডিয়া কি দেখায়? কোন এক সমুদ্র পাড়ে এক সূঠাম দেহের পুরুষ স্নান করে বগল আর শরীরে স্প্রে করছে। তাই দেখে কতি পয় সল্পবসনা নারী ( বলতে গেলে একেবারে উলঙ্গ) এসে পুরুষ টিকে চার পাশ দিয়ে জোরে জড়িয়ে ধরছে। আর এক্সপ্রেশন দিচ্ছে এমন সেক্সি তুমি? আমরা এক্স কিনছি কারন মুক্ত বাযার অর্থনীতির হাওয়া আমদের দেশে ও বইছেযে। অন্য একটি পণ্য যেটাক বডি স্প্রে এর বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে। যেটি বাণিজ্য ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি কোম্পানী আমাদের দেশে বাযারজাত করছে। কিন্তু ঐ বিজ্ঞাপনে কি চমৎকার দেখা গেল? গাড়ীতে একটি পুরুষ বসে আছে এটি দেখে এক তরুনি বুক টা নিচু করে লিফট চাচ্ছেন। তরুন এর গায়ের বডি স্প্রে এর ঘ্রানে মেয়েটি পাগল প্রায়! তার শরীরের বুকের বোতাম গুলী পট পট করে খুলছে। একপর্যায় গোটা বক্ষ উন্মুক্ত হয়ে যায়। শেষ মেশ এটা আর বডি স্প্রে এর বিজ্ঞাপন থাকেনা। মনে হয় কোন এক মক্ষি রানী নগ্ন হয়ে কাম বাসনায় লিপ্ত হবার জন্য পুরুষ টিকে আহ্বান জানাচ্ছে! নারী কি এইখানে পণ্য নাকি ঐ বডি স্প্রেটি এইখানে পণ্য? স্যাটেলাইট এর প্রভাবে আমাদের ড্রয়িং রুম এ বসে এই নারী নামের পন্যটির শারীরিক কসরত আমরা দেখছি। আর মুক্ত বাযার এর কারনে ২৫০ টাকা দিয়ে আমারা যেঁটাক বডি স্প্রে কিনছি! আসলে কি আমারা পুরুষ রা পণ্য টি কিনলাম নাকি ঐ নারীর যৌন শুঁড় শুঁড়ানি দেখে মনে মনে এই ফন্দি আঁটলাম যদি এই স্প্রে ব্যবহার করে বাংলার ললনাদের এমন এক্সপ্রেশন আমরা ও পেতে পারি!
আমাদের দেশের টি ভি মিডিয়ার নারী দের নিয়ে অভিযোগ এর শেষ নেই।তারা নাকি চরিত্র হীনা, উচ্চ মানের যৌন কর্মী। কেউ কেউ বলেন ওয়ান কাইন্ড অফ প্রস? কিন্তু কেন এটি? মিডিয়া কি আমাদের যৌন দাসী তৈরী করার কারখানা? ১৯৯৬ সালের কোলকাতার আনন্দলোক পত্রিকার এক সাক্ষাৎকারে তখনকার হট অ্যান্ড হিট নায়িকা মমতা কুলকারনি বলেছিলেন “ বলিউডে অভিনয় করে কোন নারী তার সতীত্ব ঠিক রেখেছেন এমন কেউ যদি বলতে পারেন তবে তিনি ফিল্ম থেকে চির বিদায় নিবেন” তার এই কথায় তখন অনেকে প্রতিবাদ করলেও মমতার সামনে কেউ ই দাড়াতে পারেনি। কারন মমতাই বলেছিলেন আমার সামনে এসে বলুন, আপনার কু কর্ম আমি ধরিয়ে দেব। উল্লেখ্য তৎকালীন সময় মমতার অতি ফিল্মি নগ্নতার কারনে বেশ সমালচিত হয়েছিল।একি অপরাধে অপরাধী হয়ে ছিল অক্ষয় কুমার। কেউ কেউ এখনো তাকে খিলাড়ী অক্ষয় নামে ডাকে! তৎকালীন পত্রিকার পাতা গুলী মমতার ইমেজ দিয়ে কভারেজ করা হোতো। আমদের দেশের সাম্প্রতিক কিছু নারী অভিনেত্রি দের কর্মকাণ্ড মমতাকেও ছাড়িয়ে যায়। বাস্তব একটি কথা বলি। চাঁদ তারার মত সত্য এটি।
আমার এক বড় ভাই যিনি ফিল্ম প্রডিউসার যার নাম তুফান। বাংলাদেশের অনেক মুভি তিনি প্রযোজনা করেছেন। উল্লেখ যোগ্য মুভি হচ্ছে আত্মগোপন, নাগ নাগিনির স্বপ্ন, যে প্রেম বাধা মানেনা। সম্প্রতি বাংলা চলচ্চিত্রের বাজারে বেশ খরা যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে তিনি কাশফুল মিডিয়া নামে একটি প্রোডাকশন হাউজ বানিয়েছেন। যেইখান থেকে বর্তমানে রেদয়ান রনি, কচি খন্দকার, মস্তফা কামাল রাজ সহ অনেক নির্মাতা নাটক বানাচ্ছেন। অনেক গুলী অন এয়ার হয়ে ও গেছে। যাই হোক অবসরে মাঝে মাঝে কাকরাইল এর সেই হাউজ এ কোন এক সময় আমার যাতায়াত ছিল। কিন্তু যেই বীভৎস জিনিস গুলী আমার চোখে পড়ে তাতে ছোট্ট কথায় বলছি মিডিয়া পল্লির রাতের জলসা জমে মদের বুদবুদানি আর নিষিদ্ধ রোমাঞ্চএর সংমিশ্রণে! নীল স্পট আলোতে চলতে থাকে সমাজের এলিট শ্রেণীর পুরুষ আর মিডিয়ায় নাম লেখান তথাকথিত নারী পণ্যর অবাধ যৌন মেলা মেশা! বিষয়টির গ্রহন যোগ্যতা বাড়াতে আর ও একটি বিষয় আপনাদের কে যানাই। বছর ৩ এর আগের কথা ইয়াবা সুন্দরি নিকিতা আর জয়নাল যখন ধরা খেয়ে গেলো তখন অনেক হাড়ীর খবর ফাস হতে লাগলো। তৎকালীন তদন্তে অনেকের নাম আসতে লাগলো যাদের ৮০ ভাগ ই টি ভি আর ফিল্ম মিডিয়াতে কাজ করেন।অনেক পত্রিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে স্রাবন্তি, তিন্নি, হিমু, সান্তা ইসলাম, শমি, কেয়া,তমালিকা, ছবি, শুমি, তাঞ্জিলিকা, মুন মুন, শানু, ময়ুরি, কেয়া, নদী, সহ অনেক তথা কথিত নারী নামের মক্ষীরানিদের অজানা কাহিনি বের হতে লাগলো। আমার বন্ধু ক্লোজ আপ তারকা সঙ্গিত শিল্পী পুলক। যার সম্প্রতি যাযাবর নামের একটি অডিও এ্যালবাম বের হয়েছে। এই পুলক ই আমাকে একসময় বলেছে রিয়েলিটি শো এর নামে ছালমা, রণটি দাশ, নিসিথা বড়ুয়াদের সাথে কি করা হয়েছে?
ইটি ভি তে বোটানিক এরমা মিডিয়া গসিপ এ সাংবাদিক গীতিকার তানভির তারেক এর এক প্রশ্নের জবাবে চিত্র নায়িকা নিপুন বলেছিলেন, “ সিনেমাটা রাতের অন্ধকার, তাই রাতে যে যত লবিং করতে পারে সেই তত গেইন করে” ভদ্র ভাষায় এর চাইতে আর কিছু কি বলা প্রয়োজন? পাঠক বুঝে নিয়েন বাকি টুকু।যাই হোক আপনারা বলবেন এত ঘ্যান ঘ্যানানি করছি কেন? লক্ষ করুন যাদের নিয়ে এতক্ষণ সময় নষ্ট করলাম তারা সবাই নারী। এরা কি পণ্য হচ্ছে পুরুষদের? নাকি পুরুষ এদের বাধ্য করাচ্ছে? এরা স্ব ইচ্ছায় কি এলিট শ্রেণীদের কাছে অর্থ আর বিত্তর জন্য সমর্পিত হচ্ছে? টান বাযার, দউলদিয়ায় পতিতা পল্লিতে যারা দেহ ব্যবসা করে তারা পুরুষদের বলে কাস্টমার, আর তারা সাজে পন্যে। তারা না হয় পেটের দায়ে দেহ বিক্রি করে। কিন্তু সমাজের বিভিন্ন পেশার ও বিভিন্ন নারী মিডিয়া লেবাস ধারি যখন রাতে বারিধারা, গুলশান, নিকেতনে যখন পণ্য হয় তারা কি পেটের দায়ে পণ্য হয়? নাকি শরীরের চাহিদার জন্য পণ্য হয়? নাকি অত্যন্ত কমদামের করলা ২০০৫ সাদা মডেল এর একটি গাড়ী আর একটা বাড়ি বা ফ্লাট এর জন্য পণ্য সাজে? উল্লেখ্য টি ভি তে একবার মুখ দেখানোর পরে ঐ সব নারীরা রিক্সায় বা ছি এন জি তে চলতে পারেনা। সবাই তাকে দেখলে তাকায়। ঐ দেখ অমুক যাচ্ছে, কি ছেলিব্রেটি!কিন্তু টি ভি তে অভিনয় করে কি রাতা রাতি গাড়ী বাড়ির মালিক বনা যায়? তাই না হয় দেহ দান! এইখানে নারী টি আবার ও পন্যে রূপান্তরিত হোলো। এমন একটি পন্যে যেই পণ্যটি কথা বলতে জানে!
তাজ্জব ব্যাপার। এইখানে নারীটিকে কে পণ্য বাণালো? নারী স্বাধীনতা, নারীর পেটের চাহিদা, নাকি নারীর অতিরিক্ত সামজিক চাহিদা? বর্তমানে বিভিন্ন রকমের সুন্দরী প্রতিযোগীতা চলছে বাংলাদেশে। যা কিনা নগ্নপ্রায় নারীর শরীরকে, যৌনতাকে ভদ্রতার মুখোশ পরিয়ে উপস্থাপন করার ই নামান্তর। চ্যানেল আই এর একটি সুন্দরি প্রতিযোগিতার একটি গল্প আমি আপনাদের জানাই। অনেক গুলী সুন্দরি ক্যা ট ওয়াক করছেন। বিচারক ছিলেন কানিজ আলমাছ খান, তানিয়া, আর মডেল নোবেল। যাই হোক আমি সন্ধার পর টি ভি নিউজ দেখার জন্য টি ভি সেটের সামনে বসি। চ্যানেল আই এর রাত ৯ টার নিউজ এর জন্য চ্যানেলে ঢুকলাম। কিছু সময় বাকি নয়টা বাযতে। ঐ সময় টিতে অন এয়ার হচ্ছিল ঐ সুন্দরি প্রতিযোগিতা টি। একটি মেয়ে আকা বাঁকা হেটে বিচারক দের সামনে এসে দাঁড়ালেন। কিন্তু একি বীভৎস ড্রেস! এটি কি সুন্দরি প্রতিযোগিতা? নাকি তারি শরীরের দুল দুলানি? এ যেন বক্ষ প্রদর্শনী! লজ্জায় মুখ লাল হয়ে আসে। কারন ঐ সময়টিতে আমার পাশে বসা ছিল আমার ছোট ভাই। বাংলাদেশের মত একটি দেশে নারী স্বাধীনতার একি অপ ব্যাবহার।ঐ ললনার পুরা শরীরের ৭০ ভাগ ই ছিল অনাবৃত! বগল এর অংশ গুলী, বুকের অন্তর্বাস ভেদ করে যেন সব কিছু বের হয়ে যেতে চায়। এ যেন আদিম যুগের কোন একসময় এর সল্প পোশাক পরিহিতা মেয়ের শরীর প্রদর্শনীর অদেখা গল্পের চরিত্রায়ন ! বিচারক তানিয়া বল্লেন "তোমার বুকের ঐ বিউটি বন খুব আকর্ষণীয়। তোমার লুক প্রিটি অ্যান্ড এটরাকটিভ!" কি ভয়ানক অবস্থা ঐ রুপ প্রায় বিবস্ত্র ঐ মেয়েটিকে তানিয়া কি সুন্দর করে কমেন্ট করছেন। মনে হচ্ছিল কোন এক উচু সমাজের এক উচু মক্ষীরানী অত্যন্ত নির্বোধ অথচ সরল সাদা সিধে একটি মেয়েকে অন্ধকার পথের দিকে আসার উদাত্ত আহভান জানাচ্ছে।
একটি কথা আমি বলে রাখি ঐ মেয়েটিকে ঐ সময় টিতে বেশ নার্ভাস দেখাচ্ছিল। কারন ঐ সল্প বসনা নারী টি নিজেও ঐ পোষাকে বিব্রত বোধ করছিলেন। পর্দার সামনে সবকিছুই রঙ্গিন লাগে। কিন্তু পর্দার অন্তরালে কি হয় তার কিছু আমি আগেই বর্ণনা করেছি। নিত্য নতুন যে টিনএজ মেয়েরা মিডিয়াতে ঢুকছে তাদেরকে মূলত এলিট ক্লাসের যৌন ক্ষুধা মিটাতে ব্যবহার করা হয়।এটি কি মিথ্যা? মিডিয়া কি ভিন্ন ভাবে আধুনিকতার মুখোশে মেয়েদেরকে ভোগের সামগ্রী বা পন্নে রুপান্তরিত করছে? এর জন্য কে দায়ী? সমাজ ব্যাবস্থা, আমদের বাবা মা নাকি নারী স্বাধীনতা? কিছু আগে মিডিয়ার মেয়ে প্রভা রাযিব স্ক্যান্ডেল ফাঁস হয়ে যাবার পর পাড়ার ভিডিও ক্লাব গুলি ঐ ছি ডি ভাড়া দিয়ে কি না রম রমা ব্যাবসা না করেছে। মনে হচ্ছিল তারা পণ্য বিক্রি করছিল, আর ক্রেতা পণ্য কিনছে। এর পর আর এক মিডিয়া কন্যা বৈশাখী টিভির এঙ্কর চৈতি আর নির্মাতা এনামুল কবির নির্ঝর এর অন্তরঙ্গ সহবাস দেখে কি কারো মনে হয় মেয়েটি ঐ পুরুষ টি দারা নির্যাতিত হচ্ছেন? নাকি নিজের চাহিদা পুরন এর জন্য তিনি ঐ নির্মাতার ভোগ্য পন্যে রুপান্তরিত হচ্ছেন? উল্লেখ্য নির্ঝর বর্তমান সময়ের অনেক ব্যাস্ত একজন নির্মাতা। আহা! ছবির ব্যাপক জনপ্রিয়তার পর তার চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। এইখানে নির্ঝর কিন্তু বিবাহিত এক পুরুষ। যদিও তিনি তাঞ্জিলিকা কে ২ বিবাহ করেন। লক্ষ করুন এইখানে চৈতি নামের মেয়েটি কেন বিবাহিত ঐ পুরুষটির দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন? ভি ডি ও ক্লিপ যেঁটা প্রমান করে চৈতি স ইচ্ছায় সমর্পিত হলেন নির্ঝর এর উপর। এটির জন্য কি দায়ী? মেয়েটির অতিরিক্ত স্বাধীনতা? নাকি মেয়েটির সমাজে একটু প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য সর্বস্ব খুইয়ে সামাজিক অবস্থান পাবার এক হীন প্রচেষ্টা? যদিও মেয়েটি এখন ও অবিবাহিতা। কিন্তু ফিজিক্যাল কন্ডিশন দেখলে মনে হয় তিনি এর পূর্বেও একাধিক বার বিবাহ পূর্ব নিষিদ্ধ যৌন সম্পর্ক সম্পাদন করেছেন।এর জন্য কি সমাজ দায়ী? নাকি মেয়েটি? নাকি ঐ পুরুষ টি যার স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও অন্য নারীতে মজেছেন? সর্বশেষ অরুন চৌধুরী আর তথাকথিত এক মডেলের ভি ডিও ক্লিপ ফাস হবার পর কি দেখা গেল? আরুন কি ঐ নারীর উপর চড়াও হলেন নাকি স ইচ্ছায় মেয়েটি অরুনের হাতে নিজেকে সোপে দিলেন?
অনেক বিজ্ঞ জন মিডিয়াকে সমাজের দর্পণ বলে থাকেন।কারন সব চাইতে শক্তি শালি গন মাধ্যম হচ্ছে টি ভি চ্যানেল চলচ্চিত্র আর পত্রিকা।সঙ্গত কারনে এই মিডিয়া দারা আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা বেশ প্রভাবিত হয়। সেই সাথে সমাজের মানুষ গুলী। পাশ্চত্ত সংস্কৃতি আমাদের রক্তে মাংসে এত বেশি মিশে গেছে যে আমরা খুব অল্পতে প্রভাবিত হয়েযাই। তাই ঢাকায় শাহরুখ খান আর সালমান রা যখন আমাদের নারীদের মঞ্চে ডেকে নিয়ে কিছ করে এটি ও আমরা মেনে নেই খুব স্বাভাবিক ভাবেই। মনে রাখিনা এটি বাংলাদেশ। দেশের সিংহ ভাগ জনগন ই মুছলিম এটি ও ভুলে যাই। ভুলে যাই ধর্মীয় মূল্যবোধ, পারিবারিক শৃঙ্খলা, রুচি আর মার্জিত বোধ টুকুন। নারী তো স্বাধীন তাই নারী ক্লাবে যাবে, ডিযে তে খ্যামটা নাচ নাচবে। কোন বাধা নেই। একটু শরাব পান তা ও হালাল হয়ে যাবে।
আই পি এল ক্রিকেট খেলায় দেখি নারীরা মাঠের চার পাশে অর্ধ নগ্ন হয়ে ঘুর ঘুর করছে। চার ছয় কিংবা আউট হলে ই শুরু হয়ে যায় বীভৎস নৃত্য। ক্রিকেট এর সাথে নারী দেহের কি সম্পর্ক আছে আমি বুঝতে পারিনা। নারীকে ঐ ভাবে বিকিনি পড়িয়ে দাড়িয়ে রাখা হয় কেন? নারীর বিশেষ যায়গা টি দেখে দর্শকদের আদিম সুখ দেবার এই টনিক টি কি নারী ধর্ষণ এর চাইতেও বড় অপরাধ নয়? আমাদের দেশের তরুনিরা পার্টি তে যাবে। আমোদ ফুর্তি করবে। সরাব পান করবে। একাধিক বয় ফ্রেন্ড থাকবে এটি মামুলি ব্যাপার। কিছু কিছু নারী আবার এটিকে তাদের স্বাধীনতা ভেবে বগল বাজাবে। তবে ঐ নারীটি যখন তার বন্ধুর স্বীকার হয় তখন এটি কি ধর্ষণ হলেগেল? নাকি নারী নির্যাতন? আমাদের সমাজ ব্যাবস্থা নারীদের ক্লাবে যেতে বাধা দেয়না। একাধিক বয় ফ্রেন্ড থাকা কে ও সমর্থন করে, গুলশান বনানি নিকেতন উত্তরার খ্যাতনামা ক্লাব গুলীতে যে নারীকে পরোক্ষ ভাবে পন্যে বানানো হয়, এটি বুঝি সমাজ পতিরা দেখেও দেখেননা। নারীবাদীরা কেবল দেখে নারী নির্যাতন হোল কিনা। সমাজের ভাবুক এই শ্রেণীর কি মাথা ব্যথা আছে তাদের চোখের সামনে দিয়েই যে তাদের সন্তান তথা নারী সমাজের বড় একটি অংশ নারী নামের একটি প্রাণী থেকে নারী নামের কথা বলা একটি পন্যে রুপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে? নারী সমাজ বাদিরা মানুন আর নাই বা মানুন নারী নির্যাতন এর চাইতে নারীর পণ্য হয়ে যাওয়াটা নারী নির্যাতন এর অন্য এক বিপরীত ক্রিয়া। তাই সমাজবাদীরা ভাবুন এক্ষণই। শুধু নারী অধিকার নয়, শুধু নির্যাতন বন্ধ নয়, নারীকে পন্যে পরিনত করার হীন এই অপ চেষ্টা ও বন্ধ হোক। অন্তত এই বাংলাদেশে।
( লেখাটি জগতের সকল নারীদের কে নিয়ে নয়। শুধু ঐ সব নারী যারা ভদ্রতার আড়ালে মুখোশ পরা কিছু কুৎসিত মানুষদের হাতে পণ্য হচ্ছে, বা আগামীতে পণ্য হতে চায় ঐ সব নারীদের জন্য। আর সমাজ বাদীরা আপনারা যারা নারী অধিকার নিয়ে চেচিয়ে গলা ফাটান- তাদের জন্য ও। কারন তারা কেবল নারী অধিকার চান। নারী যে পণ্য হচ্ছে তারা যেন দেখছেনা)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন