২০০৮
সালের নভেম্বর এর ১৭ তারিখ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর একটি আমাকে যেতে হয়েছিল
কলকাতায়। সঙ্গে ছিলেন চ্যানেল আই এর প্রোগ্রাম
ডিরেক্টর হাসান আবিদুর রহমান জুয়েল। মূলত কাজটি
ছিল ভারতের ই টি ভি বাংলায়। সেই সময়
ভারত- বাংলাদেশ দুই বাংলা যৌথ ভাবে সুর দরিয়ার এপার ওপার শিরোনামে একটি মিউজিক
রিয়েলিটি শো এর আয়োজন করেছিলেন। আর অনুষ্ঠান
টি যৌথ ভাবে চ্যানেল আই এবং ইটিভি বংলা (ভারত) প্রযোজনা ও প্রচার
করেছিলেন। যাই হোক সেই টিভি প্রোগ্রাম এর কাজেই
আমাকে ওই দেশে অবস্থান করতে হয়েছিল প্রায় ৭ দিনের মত। আর
ওই সময়টিতে ই টি ভি বাংলার অনেকেই বেশ পরিচিত হয়ে গিয়েছিল
আমার। ওরা ভীষণ আন্তরিক। ২১শে নভেম্বর
সন্ধ্যার খানিকক্ষণ আগে ই টি ভি বাংলার হেড অফ
প্রোগ্রাম মিঃ অজিত রয় এসে আমাকে বল্লেন-
"ছোট
ভাই আমাদের দেশ কেমন লাগছে?"
আমি
বললাম-
"ভীষণ
ভাল দাদা।"
দাদা
বললেন-
"কোথাও
যাওয়ার কোন সুযোগ কি হয়েছে?"
আমি
বললাম-
"না
দাদা।"
তিনি
বললেন-
"কাল
বিকালে তোমাকে ভীষণ সুন্দর একটি জায়গাতে নিয়ে যাবো।"
তার
পর তিনি প্রোডাকশন এর কাজে তার চেম্বারে আবার ও চলে গেলেন। আমরা
আমাদের কাজ করছি। আর দেখছি
কলকাতা আমাদের ব্রডকাস্ট থেকে কত উন্নত। কতটা কাজ পাগল ওরা। কাজ জেনে কাজ করতে আসে ওরা।সবাই এক একটা মাষ্টার পিস!
পরের
দিন বিকালে সত্যি অজিতদা এলেন। বললেন-
"চল।"
আমি
বললাম-
"কোথায়
দাদা?"
উনি
বললেন-
"আগে
তো চল।"
যাই
হোক, নভেম্বর
মাস; শীত
খুব একটা পড়েনি। তবুও একটি ভারী টিশার্ট পরলাম। এবং যথারীতি অজিত দাদার সঙ্গে তার মারুতি সুজুকি তে চড়ে বসলাম। দাদা ড্রাইভ করছেন। আর আমি তার বাম
পাশের সিটে বসা। পেছনে ই টি ভি বাংলার ২ প্রোগ্রাম
কর্মকর্তা। গাড়ী চলছে। আর
আমি কেবল তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি। হিন্দি জানা
ছিল। কাজেই কথা বেশ ভালই চলছিল। অজিত
দা বাংলা বলতে পারলেও ঘুরে ফিরে হিন্দিতে বক বক করেন একটু বেশি। গাড়ী চলছে
আর আমি রাস্তার মাইলেজ বোর্ড গুলো দেখছি। কোথায় এলাম? বামে তাকিয়ে দেখি
হায়দ্রাবাদ। খানিক ক্ষণ
পর গাড়ী থেমে গেলো। আমরা নামলাম। সামনে দেখি বিশাল এক
প্রাসাদ সমান অট্টলিকার প্রধান ঢোকার ফটক।তাতে লেখা আছে রামুজি ফিল্ম সিটি।
সন্ধ্যা
হয়ে গেছে। চার পাশে লাল নীল সবুজ স্পট আর নিয়ন
আলো। আমরা গেটের ভেতর ঢুকতেই ওইখান কার গার্ড আমাদের বিশাল এক
স্যালুট দিয়ে স্বাগত জানালো। ভিতরে ঢুকে
আমার
মনে হল আমি কি স্বপ্ন দেখছি? সাথে করে ক্যামেরা নিয়ে আসিনি। হোটেলে
ক্যামেরা রেখে
এসেছি। এই খানে আসবো জানলে আগেই ক্যামেরা সাথেই রাখতাম। অবাক বিস্ময়ে বিমোহিত হয়ে রাতের রামুজি ফিল্ম সিটি ফ্যাল
ফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছি।
চারিদিকে
লাইট, অ্যাকশান,
কাট,
ওকে,
প্যাকাপ,
এক্সপ্রেশান,
ইত্যাদি
পরিচিত শব্দ গুলো
কানে ভেসে আসছে।আমি বললাম দাদা এটি কি সরকারী ফিল্ম
ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন( কে এফ ডি সি)? অজিতদা বললেন নারে এটি আমাদের কলকাতার ই
টি ভি বাংলার সিস্টার কন্সারন রামুজি ফিল্ম সিটি। এটি ব্যক্তি
মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত। আমি শুনে অবাক! চলচ্চিত্রের জন্য ব্যক্তি
উদ্যোগে এত বড় একটি প্রতিষ্ঠান। আর আমাদের
বাংলাদেশে সরকারী এফ ডি সির কি হাল। ভেতরে ঢুকলেই
মনে হয় বেগুন বাড়ির বস্তিতে আছি।
অজিত
দা আমাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন। একটি পরিপূর্ণ ফিল্ম সিটি। হলিউডে
যাওয়ার ভাগ্য আমার হয়তো কোন দিন হবেনা। তবে
হলিউডের ইমেজে যতটুকুন দেখেছি তাতে মনে হয় ভারতে বাংলা চলচ্চিত্রের
কনসালটেন্ট হিসাবে হলিউডের অন্তত ৫০ ভাগ প্রযুক্তি, লোকেশন এবং
স্পট সহ সকল সুবিধা এই রামুজি ফিল্ম সিটিতে রয়েছে।আমরা ক্যান্টিনে মাটির পেয়ালায় চা পান
করছি। হঠাৎ করে
কে
যেন সামনে এসে দাঁড়ালো। মাথায় চুল
নেই। পুরুষ পুরুষ
চেহারা। কিন্তু নারী
কণ্ঠ। উনাকে দেখে
অজিত দা উঠে দাড়িয়ে গেলেন। আমি চিনিনা তাই বসে রইলাম। অজিত দা তার পা ছুয়ে সালাম
করলেন। আমি
তখন বুঝলাম উনি বিখ্যাত কেউ হবেন। কেননা অজিত
দার টেবিলের
সামনে কোলকাতার সব নামকরা সেলিব্রেটিরা ঘুরঘুর করে। দাদা
তাদের কে পাত্তাই দিতে চায় না। আর সেই অজিত
দা কার পা ছুয়ে সালাম করলেন? কৌতূহল বেড়ে গেল। বললাম
দাদা-
"উনি
কে?"
দাদা
হেসে বললেন-
"চেন
না?"
দাদার
কথা শেষ না হতেই পাশে থেকে হাত বাড়িয়ে উনি বললেন
"আমি
ঋতু পর্ণ ঘোষ।"
আমি
লজ্জায় আর হীনমন্যতায় মাথা নিচু করে আছি। ভারতের
বিখ্যাত এই নির্মাতা আমার সামনে। পর্দার আড়ালের
এই কারিগর কে আমি চিনলাম না? এত বড় সেলিব্রেটি আমার সামনে আর আমি তার পাশে বসে আছি। স্বপ্নের ঘোরে আছি। আমি বললাম-
"দিদি
আমি আপনাকে চিনতে পারিনি।"
দিদি
বললেন-
"আমাকে
দাদা ও বলতে পার।"
বলেই
হাসিতে ফেটে পড়লেন। তারপর তিনি বললেন কি নাম তোমার? আমি আমার
পরিচয় দিলাম। অনেক কথা হল তার সাথে। কথা প্রসঙ্গে
তিনি বললেন ঢালিউডের কি অবস্থা? তোমাদের দেশে কি সব ছবি নির্মিত হয়?
আমি
বললাম বাড়িয়ে বাড়িয়ে। দিদি ঠিক ধরে
ফেললেন। বললেন দেশকে
ভালবেসে মিথ্যা বলা পাপ বা অপরাধ নয়। তবে তোমাদের দেশের চলচ্চিত্রের
এক সোনালি অতীত ছিল কোন এক সময়। টালিগঞ্জ তোমাদের দেশ থেকে শিল্পী এনে এইখান কার
ছবি নির্মাণ করতো। এমন কি বহু
বাংলাদেশী ছবির কপিরাইট এনে এই কলকাতা কপি ছবি
বানিয়েছে। কিন্তু
তোমাদের চলচ্চিত্র আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। হাতেগোনা দুই পাচ জন মেধা
আছেন যাদের মধ্যে তিনি তানভীর মোকাম্মেল,তারেক মাসুদ,আমজাদ হোসেন,
সুভাষ
দত্ত এবং আর কার কথা যে বলেছিলেন মনে পড়ছে না।
আসি
এবার আমাদের বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। সেইখান কার বাংলা ছবির অবস্থা ১০
বছর আগে একেবারে ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। সেই
আস্তাকুরে থেকে কি মিরাকল ঘটে গেলো যে ভারতের বাংলা ছবি গুলো রীতিমত
হিন্দি ছবির সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে? হিন্দি ছবির বাজার বিশ্ব জুড়ে। এমনকি এক সালমান খান বা আমির খান কে যেই
পারিশ্রমিক দিতে হয় সেই পারিশ্রমিকের শিকি ভাগ ও প্রয়োজন
পড়েনা কোলকাতার একটি বাংলা চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে। অথচ টালিগঞ্জ এর ছবি গুলো আজ গোটা
ভারতের বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের হিন্দি মুভি মোগল ইয়াশ রাজ কিছুদিন আগে আনন্দ লোক
পত্রিকায় একান্ত এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন-
"আমি
ভেবে পাইনা এত স্বল্প বাজেটে কি করে টালিগঞ্জ মুভি বানাচ্ছে? অথচ আমরা ১০০
কোটি
রুপি ইনভেস্ট করে যেই ধরনের কারিগরি ফ্যাসেলিটি বা প্রযুক্তি ব্যবহার করছি তার
সাথে
রীতিমত পাল্লা দিচ্ছে দেড় কোটি রুপির বিনিময়ে নির্মিত বাংলা ছবি গুলো। অথচ হিন্দি চলচ্চিত্রের বাজার বিশ্ব জুড়ে। আর
ভারতের বাংলা ছবির বাজার কেবল মাত্র কলকাতা কেন্দ্রিক। সেই
কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র আমাদের হিন্দি ছবির সাথে পাল্লা দিচ্ছে ভাবতে
ভালই লাগে।"
ইয়াস
রাজ এর স্পিচ গুলো শুনে সত্যি আমার কষ্ট হচ্ছিল ভীষণ ভাবে।কলকাতার টালিগঞ্জ একের পর এক এগিয়ে যাচ্ছে। ওরা বছরে এখন প্রায় ১৫০ থেকে ১৬০ টি ছবি নির্মাণ করছে। আর আমার সোনার বাংলাদেশে বছরে এখন মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ টি ছবি
নির্মিত হচ্ছে!কেবল মাত্র কলকাতা এবং এর আশেপাশে এখন প্রেক্ষাগৃহ এর সংখ্যা
১১৮ টি। এবং নির্মাণাধীন অবস্থায় আরও আছে প্রায় ৩০ টির মতন। সেই খানে আমাদের দেশের সিনেমা হল মালিক গন তাদের
প্রেক্ষাগৃহ ভেঙ্গে শপিং মল বানাচ্ছেন। দেশে
১৯৯০-৯১
সালে সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল প্রায় ১২৩০, ২০১০ সালে এই সংখ্যা নেমে এসে
দাড়িয়েছে
৭৪২-এ। ঢাকার ৪৪টি সিনেমা হলের মধ্যে
এখন আছে ৩৩টি, এগারোটিকে গুড়িয়ে দিয়ে গড়ে উঠেছে বিশাল
অট্টালিকা। গুলিস্তান, শ্যামলী,
নাজ,
লায়ন,
স্টার,
শাবিস্তান,
তাজমহল
সিনেমা হল গুলো বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই।
বাংলাদেশী
চলচ্চিত্রের কেন এই দুরবস্থা?
যদি
আপনার মাঝে কিছু না থাকে তবে ঠেলবেন কত? ঠেলে ঠেলে আর কতদুর বা যাওয়া সম্ভব?
চলচ্চিত্র
বানানোর জন্য যেই মেধা দরকার সেই মেধাবী আছেন কতজন এই দেশে? হাতে গুনে ৮ জনের
পর ৯ জনের নাম বলতে কি কেউ পারবে? কিন্তু এই দোষ কার? চলচ্চিত্র
একটি শিল্প। তবে অন্যসব শিল্প থেকে এর পার্থক্য হল এটি বিনোদন মুলক শিল্প। বৃহৎ ক্যানভাস আর শক্তিশালী এই গন মাধ্যম টি আজ জীর্ণ
শীর্ণ। মনে হয় এই দেশের চলচ্চিত্র শিল্প বলে আজ কিছু
নেই। ২৫০০০ লোকের কর্মসংস্থানের একটি মাত্র স্থান বি এফ ডি সি। সেই এফ ডি সি আজ নীরবে কাঁদে। শুটিং বলতে
আজ কেবল বিভিন্ন টি ভি বিজ্ঞাপন আর টি ভির রিয়েলিটি শো।অথচ
এই এফ ডি সি তে একসময় ১২০ টির উপরে চলচ্চিত্র নির্মিত হত বছরে। আজ তার পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩৫ এর
ঘরে! ২০১১ সালের প্রথম ছয় মাসে, জানুয়ারী থেকে জুন মাস
পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে মাত্র ১৯টি সিনেমা, বিনিয়োগকৃত টাকার পরিমান মাত্র ৩০ কোটি টাকা। ( খবর সূত্র- কালের কণ্ঠ) ।
কেন
এই পরিনতি?
আসলে
কত আর ঠ্যালা যায়? প্রয়াত মিশুক মুনির এটিএন নিউজ এর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন-
নিজের মধ্যে কিছু না থাকলে ঠেলে ঠেলে কতদূর নেওয়া সম্ভব। বাস্তবিক
পক্ষে তার কথার সার কিন্তু ভীষণ ব্যাপক। চলচ্চিত্র
বানাতে হলে আগে তো জানতে হবে। কি করে
চলচ্চিত্র বানাতে হয়? চিত্র নাট্য কি ভাবে সাজাতে হয়? ইস্ক্রিপ্ট
কি করে লিখতে হয়? ক্যামেরার লুক থ্র কি করে করতে হয়? তারপর সেট
নির্মাণ, শক্তিশালী
গল্পর চিত্রনাট্য, লাইট, সাউন্ড, ব্যাক গ্রাউন্ড সাউন্ড, এডিটিং এবং আধুনিক কারগরি জ্ঞান সকল
বিষয়ে জেনেই তো একটি চলচ্চিত্র বানাতে হয়। কিন্তু এই
বিষয়গুলো কে শিখাবে? আর এই বাংলাদেশে কোথায় শিখবেন?
বাংলাদেশে
আজও কোন ফিল্ম ইন্সিটিউট গড়ে ওঠেনি। অর্থাৎ
চলচ্চিত্র বিষয়ে পুথিগত ও ব্যবহারিক জ্ঞান নেওয়ার জন্য কেউ যদি পড়াশুনা করতে চায়
তবে তাকে সোজা চলে যেতে হবে ভারতের পুনা ফিল্ম ইন্সিটিউট বা ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে
গড়ে ওঠা প্রায় একশোর মতন প্রতিষ্ঠানে। যারা কেবল
ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিষয়ক পড়াশুনা করিয়ে থাকে। ৪
বছর
মেয়েদি অনার্স এবং ২ বছর মেয়াদি স্নাতকোত্তর এই সময়ের মধ্যে ফিল্ম সম্পর্কে
শেখানো
হয়। হাতেকলমে এবং ইন্টার্নি শেষ করে তাদের পাঠানো হয় বিভিন্ন
প্রখ্যাত নির্মাতাদের
সান্নিধ্যে। তারপর তারা আসেন ফিল্ম বানাতে। কিন্তু আমাদের দেশে কি হচ্ছে? বর্তমান প্রজন্মের ৯০ ভাগ
পরিচালক বা নির্মাতারা এসেছেন সেই ঠেলতে ঠেলতে। অর্থাৎ আজ যারা নির্মাতা তারা আমাদের এফ ডি সির একসময় ছিলেন
ক্রেন অপারেটর, প্রডাকশান বয়, ক্যামেরা ম্যান, কিংবা মেকাপ
ম্যান বা এক্সট্রা কেউ। বর্তমান সময়ের শাহিন- সুমন,
ইস্পাহানী
আরিফ জাহান, শাহাদাৎ
হোসেন লিটন, এম
এম সরকার, শাহাদাৎ
হোসেন
বাদশা, সোহানুর
রহমান সোহান, বাদশা
ভাই, নুর
হোসেন বলাই নামের পরিচালকরা সকলেই ছিলেন এফ ডি সির সেই ঠ্যালাবাজ। কাজেই
তাদের দিয়ে কি করে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র বানানো সম্ভব? সবাই কি আর
স্ব প্রতিভা নিয়ে জন্মনেওয়া সুভাষ দত্ত, আলমগির কবির, মিতা,
দিলিপ
বিশ্বাস, আমজাদ
হোসেন, গাজী
মাজহারুল আনোয়ার, শিবলি সাদিক,মতিন রহমান, চাষি নজরুল ইসলাম হতে পারে? উনারা তো স্ব
প্রতিভায় ভাস্বর ছিলেন। আজ তারাও
বেকার সময় অতিবাহিত করছেন। হাতে কাজ নাই।
আমি
ব্যক্তিগত ভাবে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়ার শিক্ষক চিত্র
পরিচালক মতিন রহমান এর সাথে কথা বলেছিলাম। জানতে
চেয়েছিলাম আমাদের বর্তমান চলচ্চিত্রের এমন দশা কেন? উনি আমাকে অনেক কিছুই বলেছিলেন। হুবহু কথা গুলো আমার মনে না থাকলেও উনার কথার সার ছিল
এমন-
"মুচি
দিয়ে জুতা সেলাই করা গেলেও বড় জোর জুতা বানানো যায়। তবে
মুচি দিয়ে পেট কেটে সেলাই করা যায়না। আমাদের ঢাকার
চলচ্চিত্র আজ একজন হিরো নাকি নিয়ন্ত্রন করছেন। তার
কথা মতন নাকি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি চলে। তার কথায়
নাকি নির্মাতারা সিডিউল তৈরি করেন। আগে পরিচালক
রা তাদের সময় মতন শিডিউল ফেলতেন। এখন নাকি সেই
হিরোর ইচ্ছায়
ই স্যুট করতে হয়। শুধু তাই নয় সেই হিরো নাকি নিয়ন্ত্রন
করেন তার মুভিতে কে অভিনয় করবেন আর কাকে বাদ দেওয়া হবে।"
যাই
হোক ওই প্রসঙ্গে আমি আর যেতে চাচ্ছিনা। বলছিলাম
ফিল্ম শেখা প্রসঙ্গে। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু ফিল্ম আর্কাইভ
অ্যান্ড ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আজও তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি। তবে আশার কথা হল এইযে বড় দেরি করে হলেও
বাংলাদেশের
দুটি বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি
অফ লিবারেল আর্টস ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগ নামে একটি অনুষদ চালু করেছেন। সেখান থেকে বর্তমানে ফিল্ম অ্যান্ড
মিডিয়া বিষয়ক শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। আশা করবো ভারতের পুনার মতন না
হোক এই দেশে একটি বিশ্ব মানের ফিল্ম ইন্সিটিউট গড়ে উঠবে।
ফ্ল্যাশ ব্যাক-
১৯৫৬ সালে মুখ ও মুখোশ চলচ্চিত্র টি দিয়ে তৎকালীন পূর্ব
পাকিস্তানে বাংলা চলচ্চিত্রের
স্বরনালী এক অধ্যায় এর শুভ সুচনার উদয় হয়। শুরুতে ধীরে চল নীতিতে চলতে
থাকে আমাদের বাংলা চলচ্চিত্র। তার
পর দেশ স্বাধীন হবার পর আবারো ঘুরে দাড়ায় আমাদের
চলচ্চিত্র। মুক্তিযুদ্ধ
পরবর্তী সময়ে আবদুল জব্বার খান, খান আতা, ইআর
খান, আলমগীর কবির, কাজী জহিরের মতো বিশিষ্ট
ব্যক্তিদের অনুরোধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্প রক্ষার জন্য ১৯৭২ সালে বিদেশী সিনেমা আমদানি বন্ধ করেছিলেন। তার
পর শুরু হয় রহমান শবনম এর যুগ। এর
পর এক এক করে আসতে থাকেন রাজ্জাক কবরী,
আলমগির
সাবানা। বেশ চলছিল ৭০
এবং ৮০ এর দশকের মাঝ সময় পর্যন্ত। তার
পর ওয়াসিম, ফারুক,
কাঞ্চন,
জসিম,
সোহেল
রানা, অলিভিয়া, নূতন, সুচরিতা,
অঞ্জু,
রোজিনা দোয়েল রা কাপাচ্ছিলেন ঢাকার চলচ্চিত্র। কিন্তু একি মুখ দেখতে দেখতে দর্শক বেশ
ক্লান্ত
হয়ে পড়ে। তাই অনেকটা
ঝিমিয়ে পড়ে আশির শেষ দশক। কিন্তু
৯০ এর শুরুতে আবারো চলচ্চিত্রে ঝড় আসে। ঘুরে দাড়ায় আবারো বাংলা চলচ্চিত্র। এহতেশাম এক জোড়া নূতন মুখ উপহার দেন। নাইম-
সাবনাজ নামের দুই নবাগত শিল্পী কে দিয়ে বানানো হল চাঁদনী
নামের চলচ্চিত্র। অবাক
বিস্ময়ে দর্শক তাকিয়ে দেখল বাংলা চলচ্চিত্রের আবারো ঘুরে
দাঁড়ানো। এর ঠিক বছর ৩
পর ১৯৯৩ সালের ২৫ শে মার্চ ভারতের হিন্দি মুভি ক্যায়ামত
সে ক্যায়ামত তাক এর কপিরাইট এনে সোহানুর রহমান বানালেন কেয়ামত থেকে কেয়ামত।
আর
বাংলা চলচ্চিত্র পেল সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিরো সালমান শাহ আর গ্লামারস
নায়িকা
মৌসুমি কে। শুরু হল আবারো বাংলা চলচ্চিত্রের ঝড়ো
হাওয়া। সে হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছিল খড়
কুটর মতন অনেক শিল্পীরা। গোটা ফিল্ম
দাপালেন একমাত্র সালমান শাহ। মাত্র
সাড়ে
তিন বছরে সালমান শাহ অভিনীত মুক্তি পেল ২৭ টি ছবি। কিন্তু
ঢালিউড এর এই বাদশা মাত্র ২৭ বছর বয়সেই ১৯৯৬ এর ৬ই সেপ্টেম্বর পাড়ি জমান না
ফেরার দেশে। মূলত সেই থেকেই শুরু
বাংলা চলচ্চিত্রের অধঃপতন এর ধারা। তার মৃত্যুর
পর রিয়াজ আর শাকিব খান ব্যাকাপ দেওয়ার চেষ্টা করলেও খুব বেশি সফলতা তারা এনে দিতে
পারেনি।
দেশিয়
চলচ্চিত্রের ধ্বংসের শুরু যেখান থেকে।
১৯৯৮
সাল। বাংলাদেশের ত্রি কুলাঙ্গার নির্মাতা এনায়েত করিম, শরিফ উদ্দিন
খান দিপু
এবং বাদশা ভাই বানানো শুরু করে দিলেন থ্রি এক্স নামের এক টিকিটে দুটি ছবি মার্কা
চলচ্চিত্র। নগ্ন নৃত্য
সেই সাথে বাথ ট্যাবে শরীর ভেজানোর ৃশ্য। প্রথমে তারা শুরু করেদিলেন ধর্ষণ
এর নামে পুরা নারীর নগ্ন শরীর উপস্থাপন এর দৃশ্য।চলচ্চিত্রে ধর্ষণ দৃশ্য আগেও ছিল। তবে সেটি ছিল ভিলেন করতিক নায়িকাকে
নিচে ফেলে চুরি ভাঙ্গার দৃশ্য পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তার পর ক্যামেরা চলে যেত অন্যদিকে। তার পর দেখা যেত
নায়িকা এলোমেলো চুল আর ব্লাউজ এর একটি হাতার সামান্য একটু ছেড়া নিয়ে ক্লান্ত হয়ে
হাঁটছেন। কিন্তু ১৯৯৮
সালেই শুরু হল সেই বীভৎস ধর্ষণ দৃশ্যর নামে রগরগে যৌন
দৃশ্য দেখানোর ভয়ানক এক প্রচেষ্টা। সেই প্রচেষ্টায় তারা সফল হলেন। এর পর প্রতি চলচ্চিত্রে গান নামের
পূরানামে যৌন উদ্দিপক সব দৃশ্য। এক শ্রেণী দর্শক
হল বিমুখ হলেও আর এক শ্রেণী হল মুখি হওয়া শুরু করে দিল। তারপর একে একে আসতে
থাকল ভয়ানক সব চলচ্চিত্র। ছি ছি। ভাবলে ঘৃণা লাগে। মরন কামড়, গুন্ডা
নাম্বার
ওয়ান, ফায়ার, আমি গুন্ডা আমি মাস্তান, কোপা সামসু,
নষ্ট
মেয়ে, নারী মাস্তান, লেডি রংবাজ
সহ নীল ছবি আসতে থাকলো বাংলাদেশে। প্রশাসন এর
নাকের ডগা দিয়ে চলতে থাকলো ওই সব নীল চলচ্চিত্র কে হার মানানো বাংলা চলচ্চিত্র। আমজাদ
হোসেন,
গাজী
মাজহারুল আনোয়ার, সুভাষ দত্ত,চাষি নজরুল,
দিলিপ
বিশ্বাস রা মুখ ফিরিয়ে নিলেন চলচ্চিত্র থেকে। লজ্জায় অনেকেই তখন ঢাকার চলচ্চিত্র
থেকে বিদায় নিলেন।
শুরু
হল বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কলংকজনক অধ্যায় এর। তার
পর গেল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কর্নেল সাইফ এর নেতৃত্বে অশ্লীলতা বিরোধী টাস্ক
ফোর্স গঠন করা হয়। একের পর এক
হানা দেওয়া হল কাকরাইল এর ফিল্ম পাড়ায়। গ্রেফতার এর
ভয়ে ইস্টার্ন কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স এর বিভিন্ন জানালা থেকে রাস্তায় ফেলে
দেওয়া হল অশ্লীল সব ফিল্ম। এফ ডি সি তে
পুড়িয়ে দেওয়া হল হাজার হাজার রিল ফিল্ম। তার পর
মোটামুটি ভাবে
অশ্লীলতা বন্ধ হলেও সেই ফিল্ম পাড়া আজ আর আগের সেই যৌবনে যেতে পারেনি। আর দর্শক যে হল বিমুখ হওয়া শুরু করে দিল সেই থেকে আজও তারা হল
মুখি হয়নি। আর সেই থেকে ঢাকার চলচ্চিত্র কোমায়
অবস্থান করছে। সেই সময়ের ভয়াবহ সেই সব চলচ্চিত্রের
কিছু
পোস্টার দেখলে সহজেই অনুমেয় হয় যে আসলে কি ঘটেছিল ৯৮ থেকে ২০০৩ এর মাঝ সময়
পর্যন্ত।
২০০৩
সাল। আবারো ভারতের হিন্দি মুভির কপিরাইট নিয়ে ডিজিটাল ডিটিএস ডলবি
সাউন্ড সিস্টেম
আর সিনেমাস্কোপ ক্যামেরা দিয়ে পরিচালক মতিউর রহমান পানু বানালেন মনের মাঝে
তুমি
নামের আর একটি চলচ্চিত্র। হল বিমুখ
মানুষ কিছুটা হলেও আবারো হল মুখি হওয়া শুরু করেদিল। কিন্তু
তার পর আর উল্লেখ করার মতন ছবি বেশ কয় বছর নির্মিত হয়নি বল্লেই চলে। তাই দর্শক আবারো হল বিমুখ হয়ে পড়ে। এই
ভাবে যেতে থাকে দুই বছর। তার পর ইমপ্রেস
টেলি ফিল্ম বেশ কিছু পরিচ্ছন্ন ছবি বানাতে থাকে। তবে
সেই গুলি আসলে অনেক টা টেলি ফিল্ম মার্কা চলচ্চিত্র হয়ে যায়। চলচ্চিত্রের নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। চলচ্চিত্রের কিছু ফ্লেবার ও রয়েছে। তবে
ইমপ্রেস স্বল্প বাজেটে আর টি ভি তারকাদের দিয়ে পরিচ্ছন্ন ছবি বানাতে
শুরু করে মোটামুটি দর্শক আবারো হল মুখি করতে পারলেও ইমপ্রেস এর ছবি গুলো
সত্যিকারের কমার্শিয়াল ছবি হয়ে উঠতে পারেনি। তবুও
তারা
দুঃসময়ের কাণ্ডারি হিসাবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে অনেক কিছুই দিয়েছিল সেই
অশ্লীলতার
ভয়াবহ যুগের মুক্তিকালিন সময়ের পর। এর পর ব্লক
বাস্টার মুভি মনপূরা আবারো হল বিমুখ মানুষ কে হলে ফিরিয়ে নিল। তার
পর থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার, খোজ দ্যা সার্চ, মনের মানুষ,
মেহের
জান, গেরিলা
চলচ্চিত্র গুলো বাংলা চলচ্চিত্রের খরা সময় কালিন কিছুটা বৃষ্টির পরশ
বুলিয়ে দিল। তবে ওই চার পাঁচটা চলচ্চিত্র দিয়ে
কি
বাংলা চলচ্চিত্রের যেই ঘাটতি সেটি পূরণ সম্ভব?
আমাদের
চলচ্চিত্র কে পৃষ্ঠপোষকতা করার জন্য সরকারী মালিকানাধীন এক মাত্র স্বায়ত্তশাসিত
প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন ( বি এফ ডি সি) নামের একটি
সংস্থা চলচ্চিত্র শিল্প কে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু
সেই সেবার নমুনা দেখলে আজ ৫ বছরের বাচ্চাও খিল খিল করে হাসে। তামাম পৃথিবীর চলচ্চিত্র আজ প্রযুক্তি নির্ভর। সব কিছু ডিজিটাল। আর আমাদের এফ
ডি সির সব কিছু সনাতন! ম্যানুয়াল ৮৩ মডেলের ৩৫ মিঃ মিঃ ক্যামেরা,
ম্যানুয়াল
ডাবিং রুম, ম্যানুয়াল
সাউন্ড রুম, ম্যানুয়াল
এডিটিং প্যানেল।
মনে
হয় ১০০ বছর আগে পড়ে আছি। চিত্র ধারন
করার ক্যামেরার ৮০ ভাগ নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। এডিটিং
রুমের প্যানেল কাজ করেনা, কালার ল্যাব নষ্ট হয়ে পড়ে থাকে। চিত্র
ধারন
করে সেই গুলো ডেভলপ করার জন্য মাদ্রাজ বা ব্যাংককে দৌড়া দৌড়ী করতে হয়। ল্যাব প্রিন্ট এর বীভৎস অবস্থা। নূতন প্রিন্ট গুলো হলে দেখলেও মনে হয় মাঝ খান থেকে পুকুরের
জ্বলের ঢেউ এর মতন একের পর এক ঢেউ খেলে যাচ্ছে। অর্থাৎ
একটা একটা দাগ উপর থেকে নিচ পর্যন্ত পুরো ছবি শেষ না হওয়া পর্যন্ত হজম করতে হয়। মুখের সাথে ডাবিং মেলেনা। দুর্বল
এডিটিং। মনে হয়
পাড়ার বিভিন্ন ভিডিও ক্লাবে পাইরেট সফটওয়্যার
দিয়ে কোন হ্যান্ডি ক্যামেরায় ধারন করা কোন ভিডিও চিত্রের দুর্বল সম্পাদনা। ঘোলাটে ছবি। লাইটিং কি এটি বোধ হয় জানেনা। কোন আধুনিক প্রযুক্তিই নেই আমাদের এফ ডি
সি তে। ওই ভাঙ্গাড়ি
পরিবেশে যে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হচ্ছে এটিই বোধ হয় অনেক
বেশি।
এফ
ডি সির শুটিং লোকেশন বলতে প্রশাসনিক ভবনের রাস্তা গুলি। সাড়ে
৩ হাতের সুইমিং পুল। তাতে আবার
পেপসির পেট বোতল ভাসতে দেখা যায়। আর জাতীয়
কবি নজরুলের একটি ভাস্কর্য। কাজেই আমাদের
সোনার নির্মাতারা ঘুরে ফিরে ফ্যান্টাসি কিংডম, গুলশানের ওয়ান্ডার
ল্যান্ড, গাজীপুরের
পুবাইল,রাঙ্গামাটির
ঝুলন্ত ব্রিজ, আর গানের মধ্যে এক দৌড় দিয়ে কক্সবাজারের লাবনি পয়েন্ট
আর হিম ছড়ির উপর পর্যন্ত দাপাদাপির মধ্যেই তাদের দৌড় শেষ হয়। এত সব প্রতিকুল পরিবেশের মধ্যে আমাদের নির্মাতারা নির্মাণ করেন
তাদের
চলচ্চিত্র। কারিগরি জ্ঞানে কতটা পেছনে আমরা সেটি
নিচের দুটি ভিডিও চিত্র দেখে বোঝা যায় অতি সহজে।
১৯৬১
সালে নির্মিত একটি গানের ভিডিও ফুটেজ দেখুন।
আর
৫০ বছর পরেও সেই ৬১ সালের গানের সুর নকল করে আমাদের দেশে নির্মিত একটি চলচ্চিত্রর
গানের ভিডিও ফুটেজ দেখুন।
লক্ষ্য
করুন ১৯৬১ সালে হিন্দি ছবিতে যেই ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছিল সেই একি
ক্যামেরা ৫০ বছর পরও আমাদের দেশের চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। তার পর ও ভারতের ওই
ভিডিও চিত্রের সুনিপুন কাজ দেখুন। আর আমাদের বাংলাদেশের কাজ দেখুন! একেবারেই
হাস্যকর। আমাদের ভিডিও
ফুটেজ দেখলে চোখে ঝাপসা লাগে। অথচ এটি কিন্তু খুব বেশি আগে
নির্মিত হয়নি। আর হিন্দি
তেরি দুনিয়াসে দূর টি দেখুন। চোখে ঝাপসা লাগে কি?
বাদ
দিলাম না হয় হিন্দি। আসুন
সম্প্রতি কোলকাতার বাংলা চলচ্চিত্রের একটি গানের ভিডিও ফুটেজ দেখি।
আর
সেই সাথে দেখুন বাংলাদেশের একেবারে নূতন একটি চলচ্চিত্রের গানের ভিডিও
ফুটেজ!!
কি
বলবেন? কোথায়
আগরতলা আর কোথায় খাটের তলা? কিন্তু এই পরিনতির জন্য আসলে কি দায়ী?
১০ বছর
আগে কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র গুলো ছিল অনেক টা বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের মতন। তবে ওদের
ভিডিও ফুটেজ বরাবর ই ছিল আমাদের চেয়ে উন্নত। তবে সম্প্রতি কলকাতার
টালিগঞ্জ বর্তমান যে প্রযুক্তিতে মুভি বানাচ্ছে সেটি তো হিন্দিকেও হার মানায়। কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র যদি এমনটি পারে
তবে আমরা পারছিনা কেন?
আমাদের
সরকারের উদাসিনতাঃ
মাত্র কয়েক বছর আগেও টালিগঞ্জ কে বলা হত মৃত্যুপুরী। আজ টালিগঞ্জে চলছে আনন্দের বন্যা। আমরা যখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছি তখন টালিগঞ্জ কেবল সামনের দিক এগিয়ে যাচ্ছে। সেই দেশের সরকার সহ ব্যক্তিকেন্দ্রিক সহযোগিতায় আজ বিশ্ব চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের নজর কেড়েছে কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র শিল্পকে সমৃদ্ধ করার জন্য ভারতের বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলো মাত্র ৫ ভাগ সুদে সহজ শর্তে ঋণ দেয় প্রযোজকদের। সিনেমা হল নির্মাণের জন্য মাত্র ৬ ভাগ সুদে ঋণ দেওয়া হয়। চলচ্চিত্র শিল্পের কাচামাল, যেমন- নেগেটিভ, ল্যাব এর জন্য রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি আমদানি করতে এল সি মার্জিন দিতে হয় মাত্র ৩ ভাগ। শুধু তাই নয় ৩৫ এম এম ক্যামেরা আমদানির উপর কোন আমদানি শুল্ক দিতে হয়না। এক কথায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কলকাতার টালিগঞ্জ চলচ্চিত্রপুরী ক্রমশ জেগে উঠছে। এখন প্রশ্ন হল ওরা পারলে আমরা পারছিনা কেন? উত্তর সহজ। আমাদের সরকার বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও এই শিল্পের উদ্যোগ নিতে সরকার একেবারেই নারাজ।বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের সবেধন নীলমণি এফ ডি সি দেশের চলচ্চিত্রের উন্নতি চায় নাকি ধ্বংস চায় এটা বোঝা মুশকিল। আগেই বলেছি ক্যামেরা গুলো অচল, শুটিং ফ্লোরের জীর্ণ দশা, সাউন্ড ল্যাব ত্রুটি পূর্ণ, রিভার্স ট্রান্সফার যন্ত্র আসবে কবে কেউ জানেনা। রিভার্স ট্রান্সফার এর জন্য এখন ছুটতে হয় মাদ্রাজ না হয় ব্যাংকক। কোটি কোটি বিদেশী মুদ্রা চলে যাচ্ছে এমনি করেই। সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই। এফ ডি সির ল্যাবে যেই কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি একেবারে নিম্নমান সম্পন্ন। আগেই বলেছি ছবির প্রিন্ট গুলোর যাচ্ছেতাই অবস্থা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতি বছর ২০-২৫ টি চলচ্চিত্র কে করমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। এমনকি সরকারী উদ্যোগে সিনেমাগুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানো হয়। আমাদের দেশে এমনটি নেই। যে কয়েকটি চলচ্চিত্রকে আমাদের দেশের সরকার করমুক্ত হবার সুযোগ দিয়েছে তার পেছনে সব সময়ই ছিল রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব। মনপুরা কিংবা মনের মানুষ এর মতন ছবিগুলোকে কেন করমুক্ত করা হয়নি? একটি দেশে ভাল চলচ্চিত্র তখনি নির্মিত হবে যখন সেই দেশের সরকার সরাসরি চলচ্চিত্র শিল্পকে প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা দেবে। তা নাহলে আমজাদ হোসেন, চাষি নজরুল ইসলাম, সুভাষ দত্ত দের মতন গুনি পরিচালকরা বেকার বসে থাকবেন।
মাত্র কয়েক বছর আগেও টালিগঞ্জ কে বলা হত মৃত্যুপুরী। আজ টালিগঞ্জে চলছে আনন্দের বন্যা। আমরা যখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছি তখন টালিগঞ্জ কেবল সামনের দিক এগিয়ে যাচ্ছে। সেই দেশের সরকার সহ ব্যক্তিকেন্দ্রিক সহযোগিতায় আজ বিশ্ব চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের নজর কেড়েছে কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র শিল্পকে সমৃদ্ধ করার জন্য ভারতের বাণিজ্যিক ব্যাংক গুলো মাত্র ৫ ভাগ সুদে সহজ শর্তে ঋণ দেয় প্রযোজকদের। সিনেমা হল নির্মাণের জন্য মাত্র ৬ ভাগ সুদে ঋণ দেওয়া হয়। চলচ্চিত্র শিল্পের কাচামাল, যেমন- নেগেটিভ, ল্যাব এর জন্য রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি আমদানি করতে এল সি মার্জিন দিতে হয় মাত্র ৩ ভাগ। শুধু তাই নয় ৩৫ এম এম ক্যামেরা আমদানির উপর কোন আমদানি শুল্ক দিতে হয়না। এক কথায় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কলকাতার টালিগঞ্জ চলচ্চিত্রপুরী ক্রমশ জেগে উঠছে। এখন প্রশ্ন হল ওরা পারলে আমরা পারছিনা কেন? উত্তর সহজ। আমাদের সরকার বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করলেও এই শিল্পের উদ্যোগ নিতে সরকার একেবারেই নারাজ।বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের সবেধন নীলমণি এফ ডি সি দেশের চলচ্চিত্রের উন্নতি চায় নাকি ধ্বংস চায় এটা বোঝা মুশকিল। আগেই বলেছি ক্যামেরা গুলো অচল, শুটিং ফ্লোরের জীর্ণ দশা, সাউন্ড ল্যাব ত্রুটি পূর্ণ, রিভার্স ট্রান্সফার যন্ত্র আসবে কবে কেউ জানেনা। রিভার্স ট্রান্সফার এর জন্য এখন ছুটতে হয় মাদ্রাজ না হয় ব্যাংকক। কোটি কোটি বিদেশী মুদ্রা চলে যাচ্ছে এমনি করেই। সরকারের কোন মাথাব্যথা নেই। এফ ডি সির ল্যাবে যেই কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি একেবারে নিম্নমান সম্পন্ন। আগেই বলেছি ছবির প্রিন্ট গুলোর যাচ্ছেতাই অবস্থা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রতি বছর ২০-২৫ টি চলচ্চিত্র কে করমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে। এমনকি সরকারী উদ্যোগে সিনেমাগুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানো হয়। আমাদের দেশে এমনটি নেই। যে কয়েকটি চলচ্চিত্রকে আমাদের দেশের সরকার করমুক্ত হবার সুযোগ দিয়েছে তার পেছনে সব সময়ই ছিল রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব। মনপুরা কিংবা মনের মানুষ এর মতন ছবিগুলোকে কেন করমুক্ত করা হয়নি? একটি দেশে ভাল চলচ্চিত্র তখনি নির্মিত হবে যখন সেই দেশের সরকার সরাসরি চলচ্চিত্র শিল্পকে প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা দেবে। তা নাহলে আমজাদ হোসেন, চাষি নজরুল ইসলাম, সুভাষ দত্ত দের মতন গুনি পরিচালকরা বেকার বসে থাকবেন।
প্রফেশনালিজম
এবং আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পী-
আমাদের
দেশের শিল্পীদের পেশাদারিত্ব কতটুকু? এই প্রসঙ্গে পরিচালক মতিন রহমান বলেছিলেন
বাংলাদেশের নির্মাতারা স্পটে আসেন সকাল নয় টায়। আর
হিরো বা হিরোইন দের ঘুম ভাঙ্গে দুপুর ১২ টায়! একটু টু শব্দ টুকু করার ক্ষমতা নেই
পরিচালকদের। কোন একটি
চলচ্চিত্রের শুটিং এর জন্য বাংলাদেশের এক হিরোকে বলাহয়েছিল রাত ৪ টার দিকে
একটি
শট দিতে হবে। সিকোয়েন্স টি এমন ছিল রাতের ট্রেন
চলন্ত অবস্থায় স্টেশন এর প্লাটফর্মে অবস্থান করতে হবে হিরোকে। তাই টাঙ্গাইল এর একটি স্টেশনে শট
নেওয়ার জন্য পূরা ইউনিট রেডি হয়ে গেল রাত ৩ টার ভেতরেই। হিরো এলেন ৪ টার একটু আগে। যাই হোক ট্রেন আসার
কথা ৪ টায়। কিন্তু পথিমধ্যে কিছু সমস্যার
কারনে একটু দেরি হচ্ছিল ট্রেন আসতে। রাত
চারটা দশ মিনিটেই হিরো অস্থির হয়ে উঠলেন। তার
ঘুম পাচ্ছে। উনার পক্ষে আর থাকা সম্ভব
নয়। নির্মাতা মতিন রহমান তাকে অনুরধ
করে রাখলেন আর কিছুক্ষণ। সাড়ে
চারটায়
হিরো চলেগেলেন। উনি চলেযাবার ঠিক ১৩ মিনিট পর
ট্রেন এলো। তবে ততক্ষণ শুটিং প্যাকাপ। এই হল ছোট্ট একটি উধাহরন। আরও একটি উধাহরন দেওয়া যেতেপারে। একটি ছবির গল্পের প্রয়োজনে আমাদের এক
হিরোর মাথার চুল সব কামাতে হবে। অর্থাৎ গল্পটা এমন হিরোর ব্রেন
টিউমার হয়েছে। তিনি বাচবেন
না। তবে বিদেশ
থেকে একজন ডাক্তার এসেছেন। তিনি বলেছেন অপারেশন করলে সম্ভাবনা ২০ ভাগ। আর না করলে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৮০
ভাগ। এখন অপারেশন
হবে। কিন্তু ব্রেন
টিউমার এর অপারেশন। কিন্তু হিরো
চুল
কামাবেন না। মাথায় চুল
ভর্তি অবস্থায় তার অপারেশন শুরু হল। আর হাসপাতালের বারান্দায়
নায়িকা ইয়া খোদা দয়াময় বলে সাবিনা ইয়াসমিন এর গানে লিপ্সিং করা শুরু করে দিল। নায়িকার ডাকে হিরো বেচে গেল। তবে ব্রেন অপারেশন এর পর দেখা গেল
হিরোর
মাথা ভর্তি চুল। এখন বুঝুন
ঠ্যালা।
ভারতের
শিল্পীদের নিয়ে অভিযোগ নেই বল্লেই চলে। নির্মাতাদের
সকল শিল্পীরা বাবা বা গুরুর মতন শ্রদ্ধা করেন। তাই ছেলের বয়সি করন যোহর যখন ডিরেকশান
দেয় তখন বিগ বি অমিতাভ সুবোধ এর ন্যায় করনের নির্দেশ অক্ষরে
অক্ষরে পালন করে। সকাল
৭ টা বল্লেই ঠিক ৭ টার আগেই স্পটে হাজির হন তারা। মনের মানুষ ছবিতে
প্রসেঞ্জিত লালনের রোল প্লে করবেন বলে তিনি ৬ মাস চুল দাড়ি কাটেন নি। এমন কি অন্য কোন চলচ্চিত্রেও ওই সময়ে
তিনি অভিনয় করেন নি। কারন চুল বা
দাড়ি
কাটা সম্ভব নয়। দর্শক যারা মনের মানুষ ছবিটি
দেখেছেন তারা প্রসেঞ্জিত এর মাথার যে চুল বা দাড়ি দেখেছেন সেটি
সত্যি তার নিজের। মেকি পরচুলা
বা দাড়ি তিনি ব্যবহার করেন নি। ঋত্বিক
রশান গল্পের জন্য শরীরের ১৫ কেজি ওয়েট কমায় বা বাড়ায়। আমির
খান ৬ মাস ঘরে বন্দি থাকে। রানী ৩ মাস
একটানা বস্তিতে বসবাস করেন। এবং
তাদের জীবনের সাথে মিশে যেতে চান। কারন রাণীর
একটি চলচ্চিত্রে তার রোল ছিল বস্তির মেয়ে। প্রফেশনালিজম
ভারতের কাছ থেকে শেখা উচিৎ বলে আমার মনে হয়।
সার পোকার সাথে সিনেমা হলের সহবাস!
আমাদের
প্রেক্ষাগৃহের(হাতে গোনা ১৫ থেকে ২০ টি ব্যতিত) বর্তমান কি অবস্থা? দম বন্ধ হওয়া
পরিবেশ। ভেতরে ধূমপান নিষেধ হলেও ধূমপান না হলে
হল জমেনা। আসন এর ফোম গুলো ছিঁড়ে
গেছে। ভেতর দিয়ে বের হয়ে আসে স্যার পোকা। দর্শক
ছানা বড়া হয়ে ছবি গেলে আর সার পোকা কুট কুট করে দর্শকের রক্ত গেলে! ফ্যান গুলো
ঘোরেনা। নিঃশ্বাস
গুলো বের করবার অ্যাডজাস্টার গুলো অচল। দর্শক কি বিনোদন এর জন্য হলে যাবে
নাকি আযাব খাবার জন্য ওই আলু পটলের গুদামে ঢুকবে?
আসলে
এত প্রতিকুল পরিবেশের মধ্য দিয়ে কি ভাবে একটি শিল্প বেচে থাকবে? তবুও যে কোন মতে বেচে
আছে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পটি সেটিই মনে হয় অনেক বড়। আমাদের
চলচ্চিত্রের
সেই সোনালি অতীত ফিরিয়ে আনতে হলে জরুরী ভিত্তিতে নিম্নোক্ত কাজ গুলো করা উচিৎ
এখনি।
১। এফ ডি সির সকল যন্ত্রপাতি আজই কেজি দরে
ভাঙ্গাড়ির দোকানে বেচে দিয়ে কিংবা ওই গুলোকে যাদুঘরে পাঠিয়ে
সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন করতে হবে।
২। অচিরেই অন্তত একটি ফিল্ম ইন্সিটিউট গড়ে তুলতে হবে।
৩। ম্যানুয়াল সকল যন্ত্রপাতি চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে
৪। শুটিং লোকেশন এর জন্য ব্যক্তি উদ্যোগ কে স্বাগত জানাতে হবে। প্রয়োজনে কর মুক্তর সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে কলকাতার রামুজি ফিল্ম সিটি হতে পারে আমাদের আইকন।
৫। ভারতের মতন ৫ সতাংশ হারে এবং সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে।
৬। সরকারী উদ্যোগে বিভিন্ন ফিল্ম ফেসটিব্যালে আমাদের চলচ্চিত্র গুলোকে পাঠাতে হবে।
৭। সিনেমা শিল্প থেকে আপাতত ৫ বছর সকল কর অবকাশ এর সুবিধা প্রদান করতে হবে।
২। অচিরেই অন্তত একটি ফিল্ম ইন্সিটিউট গড়ে তুলতে হবে।
৩। ম্যানুয়াল সকল যন্ত্রপাতি চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে
৪। শুটিং লোকেশন এর জন্য ব্যক্তি উদ্যোগ কে স্বাগত জানাতে হবে। প্রয়োজনে কর মুক্তর সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে কলকাতার রামুজি ফিল্ম সিটি হতে পারে আমাদের আইকন।
৫। ভারতের মতন ৫ সতাংশ হারে এবং সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে।
৬। সরকারী উদ্যোগে বিভিন্ন ফিল্ম ফেসটিব্যালে আমাদের চলচ্চিত্র গুলোকে পাঠাতে হবে।
৭। সিনেমা শিল্প থেকে আপাতত ৫ বছর সকল কর অবকাশ এর সুবিধা প্রদান করতে হবে।
৮। এফ ডি সি কে তথ্য মন্ত্রনালয় থেকে বাদ
দিয়ে শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় এর অধিভুক্ত করতে হবে।
৯। নূতন মুখের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের দেশিয় চলচ্চিত্রে যে শিল্পী সংকট চলছে তার সমাধান করতে হবে জরুরী ভাবে।
১০। একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
১১। ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করতে হবে।
১২। সিনেমা হলগুলো নূতন ভাবে সংস্কার করতে হবে। প্রয়োজনে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া যেতে পারে।
১৩। সর্বোপরি এই দেশের চলচ্চিত্র কে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে তার সকল সমস্যা লাঘভে সরকারকে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
৯। নূতন মুখের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের দেশিয় চলচ্চিত্রে যে শিল্পী সংকট চলছে তার সমাধান করতে হবে জরুরী ভাবে।
১০। একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সরকারকে সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
১১। ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করতে হবে।
১২। সিনেমা হলগুলো নূতন ভাবে সংস্কার করতে হবে। প্রয়োজনে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া যেতে পারে।
১৩। সর্বোপরি এই দেশের চলচ্চিত্র কে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করে তার সকল সমস্যা লাঘভে সরকারকে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
( উল্লেখিত
১৩ দফার সঙ্গে হুবহু এক মত রয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি,
পরিচালক,
প্রদর্শক
ও প্রযোজক সমিতি)
আসলে
কলকাতার টালিগঞ্জ পারলে আমরা পারবোনা কেন? মাত্র ১১ কোটি বাঙালির জন্য
টালিগঞ্জ
ছবি নির্মাণ করেন। কলকাতার ছবি
বিশ্ব বাজারে ও রপ্তানি হচ্ছেনা। কাজেই
শুধু
দেশের জন্যই তারা চলচ্চিত্র বানাচ্ছে বিশ্ব সেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ওরা যদি ১১ কোটি
মানুষের জন্য ওই ধরনের চলচ্চিত্র বানাতে পারে তবে আমার দেশ কেন ১৬ কোটি মানুষের জন্য
টালিগঞ্জ এর মতন আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ছবি বানাতে পারবেনা? সংশ্লিষ্ট
ব্যক্তিবর্গ কি নজর দিবেন আমাদের বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের উপর?
[ লেখাটি বি ডি ব্লগে ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১ তারিখে প্রকাশিত]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন